বাংলাদেশি বিয়ে দেখতে কুমিল্লায় কুয়েতি নাগরিক


admin প্রকাশের সময় : ফেব্রুয়ারী ২৮, ২০২৪, ৬:৫২ পূর্বাহ্ন /
বাংলাদেশি বিয়ে দেখতে কুমিল্লায় কুয়েতি নাগরিক

বাংলাদেশের বিয়ের রীতি দেখতে এসেছেন আবদুল্লাহ মোহাম্মদ আল বদর নামে এক কুয়েতি নাগরিক। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি তিনি বাংলাদেশে আসেন। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশেই অবস্থান করছেন তিনি।

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের ছেঁওরিয়া গ্রামের কুয়েত প্রবাসী ইকবাল হোসেনের বাড়িতে এসেছেন ওই কুয়েতি নাগরিক। প্রবাসী ইকবাল হোসেনের মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান দেখতে এসেছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়রা জানান, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি প্রবাসী ইকবাল হোসেনের মেয়ের বিয়ে ছিল। ওই বিয়ে দেখতে ১৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে আসেন কুয়েতি নাগরিক আল বদর। ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রবাসী ইকবাল হোসেনের মেয়ের গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান উপভোগ করেন আল বদর। ১৬ ফেব্রুয়ারি বিয়ের অনুষ্ঠান এবং ১৭ ফেব্রুয়ারি বরের বাড়ির বৌ-ভাতসহ সব অনুষ্ঠান উপভোগ করেন কুয়েতি এই নাগরিক।

অপরদিকে পল্লি গাঁয়ে কুয়েতি নাগরিকের আগমনে পুরো এলাকায় হৈ-হুল্লোড় সৃষ্টি হয়। তাকে একনজর দেখার জন্য ভিড় করেন আশপাশের কয়েক গ্রামের মানুষ। বাংলাদেশের আতিথেয়তায় মুগ্ধ আল বদর খুশি বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের সঙ্গে মিশে।

তার পুরো নাম আবদুল্লাহ তাহের আবদুল্লাহ মোহাম্মদ আল বদর। কুয়েতের আহম্মেদি প্রদেশের হাতিয়া শহরের বাসিন্দা তিনি। এক সময়ে সরকারি চাকরিজীবী ছিলেন। বর্তমানে অবসর জীবনযাপন করছেন। বাংলাদেশি প্রবাসী ইকবাল হোসেনের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা।

প্রবাসী ইকবাল হোসেন বলেন, ২০১৫ সালে আমি কুয়েতে যাই। তখন থেকে কুয়েতি নাগরিক আল বদরের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। একপর্যায়ে তার সাথে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। গত ডিসেম্বরে আমি কুয়েতে অবস্থানকালে আমার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস হ্যাপীর বিয়ে ঠিক হয়। আমি তখন বাংলাদেশে আসার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। তখন কুয়েতি বন্ধু আল বদর এটা শুনে বাংলাদেশের বিয়ে কেমন হয় সেটি দেখার আগ্রহ প্রকাশ করেন। পরে আমি তাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে দেশে চলে আসি। ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে কুয়েতি নাগরিক আল বদর গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে আসেন। আমরা তাকে বিমানবন্দর থেকে রিসিভ করে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসি। তিনি আরও কয়েকদিন বাংলাদেশে থাকবেন।

ওই এলাকার বেশ কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, কুয়েতি মেহমানকে দেখার জন্য দূরদূরান্ত থেকে অনেকেই এ গ্রামে আসছেন। তার সঙ্গে কথা বলছেন এবং সেলফি তুলছেন। এক কথায়-সকলে মিলে একসঙ্গে বিয়ের আনন্দটা দ্বিগুণ হয়েছে। গ্রামগঞ্জের এ ধরনের অনুষ্ঠানে ভিনদেশি কোনো নাগরিকের উপস্থিতি সত্যিই আনন্দের। কুয়েতি নাগরিক আবদুল্লাহ মোহাম্মদ আল বদর আমাদের গ্রামে এ বিয়েতে অংশগ্রহণ করাতে বিয়ের উৎসব আরও দ্বিগুণ হয়েছে। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশের কৃষিপণ্য দেখে আবেগাপ্লুত হয়েছেন। আরবি ভাষায় নিজের অভিমতগুলো প্রকাশ করছেন। তাছাড়া তিনিও খুব মিশুক মানুষ। সবার সঙ্গে মিশছেন। গ্রামের অলিতে গলিতে হাঁটছেন। সকালে বাড়ির পাশে দোকানে পরোটা খেতে যান, সবার খোঁজখবর নেন। তিনি সত্যি অসাধারণ মানুষ।

কুয়েতি নাগরিক আল বদর বলেন, বাংলাদেশ একটি সুন্দর দেশ। বাংলাদেশের বিয়ে কীভাবে হয় সেটি দেখার শখ ছিল অনেক আগে থেকেই। আমি এর আগে কয়েকবার বাংলাদেশে এলেও কখনও এদেশের বিয়ের রীতি দেখা হয়নি। ইকবালের মেয়ের বিয়ের খবর শুনে ছুটে আসি। খুব ভালো লাগছে এত সুন্দর করে বাংলাদেশে বিয়ের আয়োজন হয়। বিশেষ করে গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান একেবারেই ভিন্ন। আমাদের দেশে গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান হয় না। এখানে এসে সেটি দেখলাম। এছাড়াও বিয়ের অনুষ্ঠানও আমাকে মুগ্ধ করেছে। আমি নব দম্পতির জন্য দোয়া করি তারা যেন সবসময় হাসিখুশি এবং সুখী একটি জীবন পার করতে পারে।