কুবি প্রতিনিধি:
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উপর হামলা করে এবার শিক্ষকদের নামে মিথ্যাচার করছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন।
এ সংক্রান্ত একটি স্ক্রিনশট প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। যেখানে উপাচার্যকে বিভিন্ন জায়গায় একটি ক্ষুদেবার্তা পাঠাতে দেখা যায়। যেখানে একটি ভিডিওসহ লেখা ছিল, “যদিও বিভিন্ন মিডিয়ায় বলেছে তারা উপাচার্য এর গায়ে হাত দেয় নাই। দাড়িওয়ালা এই শিক্ষক মাহফুজ বলেছিল সে শুধু দাড়িয়েছিল,কিন্তু ভিডিও ফুটেজ দেখুন!!”
এরপর এই পোস্ট কপি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে বিভিন্ন ভুয়া একাউন্ট থেকে কমেন্ট করতে দেখা যায়। ‘আফিফ মল্লিক’ নামক একটা ভুয়া একাউন্ট থেকে বিভিন্ন গ্রুপে এই কমেন্ট করা হয়। যেই আইডিতে কোটবাড়ির বাসিন্দা মো: মুশফিকুর রহমানের ছবি ব্যবহার করা হয়।
এটা জানার পর মো: মুশফিকুর রহমান তার ফেসবুক একাউন্ট থেকে একটি স্ট্যাটাস দেন। যেখানে তিনি লিখেন, কেউ একজন আমার ছবি ব্যবহার করে কুমিল্লা ভার্সিটির বিভিন্ন গ্রুপে ও পেইজে উল্টা পাল্টা কমেন্ট করতেছে, পোস্ট করতেছে। এই আইডিটি আমার নাহ, আমার নিজের এই একাউন্ট ব্যতীত আর কোনো একাউন্ট নাই। আফিফ মল্লিক নামে এই আইডি থেকে কোনো অপকর্ম করে থাকলে এর দায়ভার আমি নিবো নাহ। সবাই এই আইডি তে রিপোর্ট মারেন, আর আমার আইডি তে যদি কুমিল্লা ভার্সিটির কেউ থাকেন তাহলে ভার্সিটি গ্রুপ থেকে তাকে ভ্যান করে দেন।
জানতে চাইলে মো: মুশফিকুর রহমান বলেন, এটা আমার একাউন্ট না। কে বা কারা আমার ছবি ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গ্রুপে বিভিন্ন উস্কানিমূলক কমেন্ট করতেছে। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউকে চিনি না। আমার এক বন্ধু জানানোর পর আমি নিজের নিরাপত্তার জন্য থানায় জিডি করেছি। আমার মনে হয় পরিচিত কেউই আমার ছবি দিয়েছে ভুয়া একাউন্ট খোলার জন্য।
মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেন, একজন উপাচার্য হয়ে এভাবে শিক্ষকদের নামে মিথ্যাচার করা শোভা পায় না। তিনি একটি ক্ষুদেবার্তা দিচ্ছেন এরপর সেই বার্তা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গ্রুপে ভুয়া একাউন্ট থেকে কমেন্ট করা হচ্ছে। তাহলে কি এই ভুয়া একাউন্টগুলো উপাচার্যের অধীনে পরিচালিত হয়? তিনি বলছেন আমি উনাকে ধাক্কা দিয়েছি। আবার তিনিই বলেছেন আমি একটি বাচ্চা ছেলে। আমি তাহলে আমার বাবার বয়সী লোককে কেন ধাক্কা দিব? তিনি যেই ভিডিওটির কথা বলছেন এটা একটা এডিটেড অ্যাপসের মাধ্যমে রিভার্স করে বানানো।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান বলেন, এটা নতুন নয়। উপাচার্য তাঁর অনিয়ম, দূর্নীতিকে আড়াল করার জন্য বিভিন্ন অনৈতিক কার্যকলাপ করে যাচ্ছেন। যার একটি হলো এই ভুয়া একাউন্ট ব্যবহার করে শিক্ষকদের নামে মিথ্যাচার করা। এটা ভার্চুয়াল ভায়োলেন্স। যা বর্তমানে ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে। আমরা জানতে পেরেছি এই ভুয়া একাউন্টগুলো উপাচার্যের পেইড এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। অছাত্র ও বহিরাগতদের দিয়ে তিনি এসব কাজ করান। তিনি লিখে দেন এবং ফেইক আইডিগুলো এসব প্রচার করে। এটার সমাধানের জন্য আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরী। আমরা শিক্ষক সমিতির মিটিংয়ে এই বিষয়ে আলোচনা করেছি। অতিদ্রুত আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিব।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম আবদুল মঈনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাঁকে পাওয়া যায়নি।
আপনার মতামত লিখুন :