তিতাসে ঈদের জামাতে আ’লীগ নেতাকে রাজনৈতিক বক্তব্য প্রদানে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের গোলাগুলি/ ভাংচুর-লুটপাট সহ আহত একাধিক


admin2 প্রকাশের সময় : জুন ১১, ২০২৫, ৯:২১ পূর্বাহ্ন /
তিতাসে ঈদের জামাতে আ’লীগ নেতাকে রাজনৈতিক বক্তব্য প্রদানে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের গোলাগুলি/ ভাংচুর-লুটপাট সহ আহত একাধিক

তিতাস (কুমিল্লা) সংবাদদাতা:

কুমিল্লার তিতাসে ঈদ জামাতের সময় আ”লীগ নেতাকে বক্তব্য দিতে বাধা দেওয়ার জের ধরে দুই গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলি, বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার বিকেলে উপজেলার মজিদপুর ইউনিয়নের শাহপুর গ্রামে আ’লীগের মনোনীত সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সরকার ও একই ইউনিয়নের জাতীয় পার্টির মনোনীত সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক মিয়া সরকার গ্রুপের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে দু’গ্রুপের একাধিকবার সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত পাঁচজন গুলিবিদ্ধ সহ৮জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গুলিবিদ্ধদের চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে এবং আহতদের তিতাস উপজেলা হাসপাতাল ও গৌরীপুর হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
আহতরা হলেন, রিপন সরকার(৫৬), সাদ্দাম হোসেন(২৫), রবিউল হোসেন(২৮), ফারুক(২৪), হৃদয় হোসেন(২১), সায়েম(২৫), মান্নান(৩৩), সুন্দর আলি (৪২)।

মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। এর মধ্যে ঈদের দিন আ’লীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম সরকার ঈদ জামাতের সময় বক্তব্য দিতে গেলে ফারুক চেয়ারম্যানের লোক আলী হায়দার কুট্টি তাকে বাধা প্রদান করে প্রতিবাদ করেন এনিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে সেদিন রাতেই জাহাঙ্গীর আলম সরকারের নেতৃত্বে তার লোকজন আলী হায়দার কুট্টি’র বাড়িঘরে গিয়ে তাকে খুঁজতে থাকেন এবং তার চাচাতো ভাই আ’লীগের ওয়ার্ড সভাপতি মো. হাসেম ভূঁইয়া’র বাড়িঘরে গিয়ে হামলা চালিয়ে লুটপাট করেন ও তার পরিবারের সদস্যদের মারধর করে হত্যার হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠে। ঘটনার পরদিন বিকালে আবারো দু’গ্রুপের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ বাধলে সেখানে উভয় পক্ষের গোলাগুলিতে ৮জন আহত হয়। পরে তিতাস থানা পুলিশ ফোর্স ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এঘটনায় স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে আতংক বিরাজমান। যেকোন মুহুর্তে আবারো রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা রয়েছে বলেও জানা যায়।
এঘটনার বিষয়ে আলী হায়দার কুট্টি ও তার পরিবারের সদস্যরা জানান, আ’লীগের সন্ত্রাসী জাহাঙ্গীর ঈদের জামাতে রাজনৈতিক বক্তব্য রাখতে গেলে আমি বাধা প্রদান করি এর জের ধরেই বিকালে আমাকে বাড়িতে খুজতে এসে না পেয়ে গালমন্দ করে জাহাঙ্গীর ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী আমার ভাই হাশেম ভূঁইয়ার বাড়িতে গিয়ে হামলা চালায় এবং বাড়িঘর লুটপাট করে আমার পরিবারের সদস্যদের মারধর করে হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যায়।

গোলাগুলির বিষয়ে আ’লীগ নেতা জাহাঙ্গীর চেয়ারম্যান বলেন, ফারুক চেয়ারম্যান ও তার ছেলে ফারাবি নিজে অস্ত্র নিয়ে আমার বাড়িতে হামলা করে এবং আমার ভাইয়ের ওপর গুলি করে। তাদের গুলিতে আমার ভাই রিপন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। আমি প্রশাসনের কাছে তাদেরকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।

ঘটনার বিষয়ে ফারুক চেয়ারম্যান বলেন, জাহাঙ্গীর চেয়ারম্যান দেশে এসেই আমার লোকজনের ওপর হামলা চালায় এবং বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করেন। তাদের হামলায় আমার ৪-৫জন লোক আহত হয়েছে। এদিকে আমার লোক হাশেম ভূইয়া’র বাড়িতে হামলা এবং লুটপাটের ঘটনায় মামলা নিতে থানায় গড়িমসি দেখাচ্ছে। উল্টো উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত ভাবে গতকাল রাতে হাশেম ভূঁইয়া যেনো মামলা না করতে পারে সে জন্য বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের হামলার মামলায় তার নাম না থাকলেও তাকে অজ্ঞাত আসামীতে যুক্ত দেখিয়ে আটক করেছে পুলিশ। সন্ত্রাসী জাহাঙ্গীর ও তার ভাই রিপনের খুঁটির জোর কথায়? কারা সেল্টার দিচ্ছে এদের? এলাকাবাসী ও জনমনে এমন প্রশ্ন বিদ্যমান।

এবিষয়ে তিতাস থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদ উল্যাহ বলেন, শাহাপুর গ্রামে ঈদের নামাজের সময় আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর চেয়ারম্যানকে বক্তব্য দিতে না দেওয়ায় তারই ভগ্নিপতি ইটালি প্রবাসী আলী হায়দার কুট্টির সাথে মারামারি হয়েছে এরই ফাকে একই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক মিয়া সরকার কুট্রির সাথে যোগ হয়ে আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীরের ওপর হামলা করে এবং উভয় পক্ষ গোলাগুলিতে জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে তিতাস থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনা স্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। বর্তমানে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। তবে এখনও কোনো পক্ষ অভিযোগ দেয়নি, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।