চৌদ্দগ্রামে সন্ত্রাসী দিয়ে ভাইয়ের সম্পত্তি দখল করেছেন বড় ভাই


admin প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৫, ১:০০ অপরাহ্ন /
চৌদ্দগ্রামে সন্ত্রাসী দিয়ে ভাইয়ের সম্পত্তি দখল করেছেন বড় ভাই

নিজস্ব প্রতিনিধি:

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মেষতলা গ্রামে দেশীয় অস্ত্রসহ আওয়ামী সন্ত্রাসী ও কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের নিয়ে নিজের শ্রবণ প্রতিবন্ধী ভাইয়ের সম্পত্তি দখল করেছেন আপন বড় ভাই স্বপন। শ্রবণ প্রতিবন্ধী ভাইয়ের নাম মাহবুবুল হক।

এর আগে গত (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২ টায় চৌদ্দগ্রাম থানাধীন ০৮নং মুন্সিরহাট ইউনিয়নের মেষতলা সাকিনে বাদীর বসতবাড়িতে ও ঘরের ভিতর হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। সেটি মাহবুবুল হকের পুরান বাড়ি। এর আগে সকাল ১০ টায় নতুন বাড়িতে হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। এ সংক্রান্ত একটি সিসিটিভির ফুটেজ এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।

ফুটেজে দেখা গেছে, কালাম, শাহীন ও মামুনের নেতৃত্বে কয়েকজন সন্ত্রাসী মাহবুবুল হকের ঘর নির্মাণের জন্য তৈরিকৃত সিমেন্টের পিলার ও দরজা ভাংচুর করে। এরপর তারা লাঠিসোঁটা ও ছুরি নিয়ে ভীতিপ্রদর্শনের উদ্দেশ্যে ওই বাড়ির সামনে শোডাউন দেয়। এক পর্যায়ে তারা বাদীকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার বাড়িতে প্রবেশ বাদীকে না পেয়ে বাদীর স্ত্রী সুমা আক্তার ও মাকে ধাক্কা দেয়।

এ ঘটনায় মাহবুবুল হক বাদী হয়ে চৌদ্দগ্রাম থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগে বিবাদী হিসেবে মামুন, শাহীন, আবুল কালাম, মো: কাশেম, সৈকতসহ আরও অজ্ঞাতনামা ১০-১২ জনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। মামুন সাবেক মেয়র মিজানের ঘনিষ্ঠ, শাহীন বাদীর ফুফা ও বাকিরা নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য বলে জানা গেছে।

তবে এই হামলার মূলহোতা বাদীর বড় ভাই স্বপন। বাদী মামলা করে ফেরার পর বিষয়টি জানতে পারে। যার কারণে মামলায় তার নাম নেই বলে জানায় বাদীর স্ত্রী সুমা।

এই মামলায় সাক্ষী হিসেবে, মোসাঃ সুমা বেগম, মোঃ আব্দুল হক, মোঃ তুহিন, দুলাল সর্দার,মোঃ রুহুল আমিন সহ আরো অনেকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

মামলার অভিযোগে বলা হয়,বিবাদীগণ একই গ্রামের বাসিন্দা এবং অজ্ঞাতনামা বিবাদীগণ তাহাদের পরিচিত কিশোর গ্যাং এর ভাড়াটে সন্ত্রাসী। তাঁরা খুবই উশৃঙ্খল, জুলুমবাজ, দাঙ্গাবাজ, পরধনলোভী ও আইন অমান্যকারী প্রকৃতির। তারা জোরপূর্বক আমার সম্পত্তি দখলের পায়তারা করিতেছে। ফলে বিবাসীদের সাথে আমার বিরোধ তৈরী হয়। ফলে তারা আমাকে হত্যার হুমকি দেয়। আমার বসতবাড়িতে হামলা করে।
গত ৮ সেপ্টেম্বর আমার বাড়িতে তারা আমার বাড়িতে প্রবেশ করে আমাকে গালমন্দ করে হত্যার উদ্দেশ্যে খুঁজতে থাকে। আমাকে না পেয়ে তারা আমার ঘরের দরজা, ঘর নির্মাণের সিমেন্টের তৈরী পিলার ভাংচুর করাসহ আমার অনেকগুলো গাছ কেটে ফেলে। ঐ সময় আমার স্ত্রী, ১নং সাক্ষীসহ প্রতিবেশীরা বাঁধা দিলে গায়ে হাত তুলে। তারা আমাকে বাড়িতে থাকতে দিবে না এবং আমাকে এবং আমার স্ত্রীকে হত্যা করবে বলে হুমকি দিতে থাকে।

মামলার ৩নং সাক্ষী আবদুল হক বলেন, এসব ঘটনা সত্যি। আসামীরা পূর্বেও বাদীর বাড়িতে ভাংচুর করেছে এবং বিভিন্নভাবে বাদীকে হুমকি দিচ্ছে। ৮ তারিখ যখন বাদীর পিলার ভাংচুর করতেছিলো তখন আমি বাঁধা দেওয়ায় তারা আমাকেও হত্যাসহ নানা হুমকি দিতে থাকে।

মামলার বাদী মাহবুবুল হক বলেন, মামুন আমাদের বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়। আমার শশুর মারা যাওয়ার পর আমার ভাসুর তার বউয়ের নামে সব সম্পত্তি করে ফেলছে। এখানে ঘর দিতে যাওয়ার সময় সন্ত্রাসী দিয়ে আমাদের জিনিসপত্র ভেঙে ফেলে। আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। আমরা মামলা করে আসার পর জানতে পারি এখানে আমার ভাসুর কালাম জড়িত। তাই মামলায় উনার নাম দেওয়া যায়নি। তারা আমাদের জায়গা দখল করছে।

২নং বিবাদী শাহিন বলেন, আমি জমি ওর চাচাতো বোন থেকে কিনেছি৷ এখন আমার কেনা জমিতে যদি ওরা ঘর করতে আসে আমি কি বসে থাকবো নাকি। আমি যে জমি কিনছি এটার সব কাগজপত্র আছে।

আরেক বিবাদী মামুন বলেন, আমি এসব কিছুই করিনি। আমি সেখানে অন্য একটা কাজে গেছি। ওরা আমাকে হয়রানি করার জন্য মামলায় নাম দিয়ে দিছে।

চৌদ্দগ্রাম থানা ওসি হিলাল আহমেদ বলেন, আমরা মামলা নিয়েছি এখন তদন্ত করে ব্যবস্থা নিব।