অনিয়মিত এক শিক্ষককে দেওয়া হলো শেখ হাসিনা হলের প্রাধ্যক্ষ


admin প্রকাশের সময় : মে ৫, ২০২৪, ৮:৫৫ পূর্বাহ্ন /
অনিয়মিত এক শিক্ষককে দেওয়া হলো শেখ হাসিনা হলের প্রাধ্যক্ষ

কুবি প্রতিনিধি:

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে এবার অনিয়মিত এক শিক্ষককে শেখ হাসিনা হলের প্রাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মেহের নিগার।

রেজিস্ট্রার মো: আমিরুল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি থেকে বিষয়টি জানা যায়।

জানা যায়, ২০২১ সালের ২৩ নভেম্বর বিভাগের ১২৪, ১২৫ ও ১২৬ তম অ্যাকাডেমিক কমিটির বর্ধিত সভায় অনুপস্থিত থাকার কারণে এবং দীর্ঘদিন বিভাগে অনুপস্থিত থাকার কারণে শ্রেণিকার্যক্রম, পরীক্ষা কমিটির ফলাফল ও পরীক্ষা সংক্রান্ত জটিলতা সৃষ্টি হয়। এসব কারণে উনাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। এরপর মেহের নিগারকে বিভাগের ছাত্র উপদেষ্টার দায়িত্ব দেওয়া হলে সময় দিতে পারবেন না উল্লেখ করে তিন সপ্তাহ পর দায়িত্ব ছেড়ে দেন তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, ম্যামকে ক্লাসে পাওয়া আর সোনার হরিণ পাওয়া একই কথা। ম্যাম বিভাগে খুব কম আসেন এবং ক্লাসও অনেক কম নেন। অন্য বিভাগে গেস্ট টিচার হিসেবে যাদের ক্লাস নেন তারাও ম্যামকে নিয়ে সমালোচনা করেন।

জান্নাত আকতার নামের শেখ হাসিনা হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থী জানান, শুনেছি উনি বিভাগেই অনেক অনিয়মিত। এমন অনিয়মিত একজন শিক্ষক কিভাবে মেয়েদের হলের প্রাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে? মেয়েদের অনেক সেন্সিটিভ ইস্যু থাকে এগুলো সমাধানের জন্য প্রাধ্যক্ষের সার্বক্ষনিক উপস্থিতি বাধ্যতামূলক।

অভিযোগের বিষয়ে অধ্যাপক ড. মেহের নিগার বলেন, কতৃপক্ষ যখন আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে আমি সেটা আনন্দের সাথে গ্রহণ করেছি। আমি আশা করছি আমি এই দায়িত্ব সততা এবং নিষ্ঠার সাথে পালন করতে পারবো। আমি খেয়াল রাখবো মেয়েরা যেন কোনকিছু থেকে বঞ্চিত না হয় এবং সব জায়গায় তাদের অংশগ্রহণ থাকে সেই চেষ্টা করে যাব। আমি যেহেতু দায়িত্ব নিয়েছি আমি কেন এখানে অনুপস্থিত থাকবো? আমি রুটিন অনুযায়ী যে কাজ থাকবে সেটা পালন করতে পারবো বলেই দায়িত্ব নিয়েছি। আমাকে যে শোকজ করেছেন উনি একজন সাদা দলের প্রতিনিধি। তাঁর শোকজ লেটার পাঠানোর কোনো ইখতিয়ার নেই। যিনি বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দশ বছর ধরে বিভাগকে স্বৈরতান্ত্রিকতার সাথে পরিচালনা করছে। বিভাগের শিক্ষকদের বিভিন্নভাবে হ্যারেশমেন্ট করে আসছে। আপনারা জানেন আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী এই কারণেই আমি ক্ষোভের শিকার হয়েছি। আমি বিভাগে অনিয়মিত নাকি নিয়মিত সেটা আপনারা আমার বিভাগের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বললে ফিডব্যাকটা নিতে পারবেন।

বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন সরকার বলেন, উনি ক্লাস কার্যক্রম এবং বিভাগের অ্যাকাডেমিক কমিটির তিনটি বর্ধিত সভায় ছুটি ছাড়াই অনুপস্থিত ছিলেন। এই কারণে ওনাকে শোকজ করা হয়েছে। উনি বিভাগের অনিয়মিত একজন মোস্ট অনিয়মিত শিক্ষক। উনাকে ছাত্র উপদেষ্টার দায়িত্ব দেওয়া হলে তিন সপ্তাহ পর তিনি তা ছেড়ে দেন। এমন একজন অনিয়মিত শিক্ষক কিভাবে মেয়েদের হলের প্রাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে সেটা দেখার বিষয়।

অনিয়মিত একজন শিক্ষক মেয়েদের হলের দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করতে পারবে কিনা জানতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম আবদুল মঈনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।