আগামীর বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষাব্যবস্থা: শিবির সভাপতি


admin প্রকাশের সময় : নভেম্বর ১৯, ২০২৪, ২:৫৬ অপরাহ্ন /
আগামীর বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষাব্যবস্থা: শিবির সভাপতি

কুবি প্রতিনিধি:

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবির কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা আয়োজিত নবীন বরণ ও ক্যারিয়ার গাইডলাইন প্রোগ্রামে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মনজুরুল ইসলাম বলেন, বিগত সরকার কর্তৃক অর্থনৈতিক সেক্টর ধ্বংসের মাধ্যমে জাতির সামগ্রিক মেরুদন্ডকে ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। এসময় তিনি শিক্ষাব্যবস্থাকে কিভাবে রাজনীতিকীকরণের মাধ্যমে জাতিগঠনের অন্তরায় হিসেবে দাঁড় করানো হয়েছে, সেটিও তুলে ধরেন।

মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন একটি রিসোর্টে প্রায় সাড়ে ৩০০ নবীন শিক্ষার্থীদের নিয়ে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিবির সভাপতি হাফেজ ইউসুফ ইসলাহীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি হাফেজ মাজহারুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মনজুরুল ইসলাম। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন কেন্দ্রীয় কলেজ কার্যক্রম সম্পাদক মোঃ শফিউল্লাহ, ঢাবি সেক্রেটারি এস এম ফরহাদ, কুমিল্লা মহানগরের সভাপতি নোমান হোসেন নয়ন, কুবির সাবেক সভাপতি শাহাদাত হোসাইন ও ইমরান আল হাসান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মনজুরুল ইসলাম বলেন‚ “বর্তমানে আমাদের সামনে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষাব্যবস্থা। শিক্ষার মূল কাজ হলো একজন ব্যক্তিকে মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা। কিন্তু আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার সামগ্রিক যে প্রসেস সেখানে একজন মানুষকে মানুষ হিসেবে গড়ে উঠার প্রয়াস ছিল খুবই সামান্য। শিক্ষা ব্যবস্থা ছিল রাজনীতি কেন্দ্রিক। অথচ শিক্ষা ব্যবস্থা হওয়া উচিত ছিল এমন যে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবে। সুতরাং ক্লাসের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো আমি এখান থেকে কী শিখে যাবো এবং জাতিকে কী দিবো।” এছাড়াও তিনি নবীন শিক্ষার্থীদের চারিত্রিক দিক থেকে সফল হতে বিনয়, নম্রতা ও মেধার চর্চার মাধ্যমে একজন সুনাগরিক হিসেবে নিজেদের গড়ে তোলার আহ্বান করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাবি শিবিরের সেক্রেটারি এস এম ফরহাদ বলেন, চব্বিশের গণ-আন্দোলনে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ই প্রথম রক্তাক্ত হয়েছিলো এবং প্রথম প্রতিরোধও শুরু হয়েছিলো এখান থেকে।

সাংস্কৃতিক প্রতিবন্ধকতা এবং সাংস্কৃতিক সন্ত্রাসবাদের বিষয় তুলে ধরে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সাংস্কৃতিক প্রতিবন্ধকতা ও অনৈতিক আগ্রাসনের ফলে সুস্থ সংস্কৃতি চর্চা হারিয়ে যাচ্ছে। ফলে শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক আগ্রাসনকে মোকাবিলা করতে হলে তাদের বেছে নিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়ে তারা কোন ধরনের সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে যুক্ত হবে।

এসময় সমাপনী বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি ইউসুফ ইসলাহী বলেন, ছাত্রসমাজ চাইলেই বাংলাদেশের ইতিহাস পরিবর্তন করে দিতে পারে। এ বাংলাদেশের ইতিহাস যতবার পরিবর্তন হয়েছে ততবার ছাত্রসমাজের অবদান রয়েছে। এছাড়াও তিনি জুলাই বিপ্লবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা ও অবদান তুলে ধরে তাদের ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদক ও সন্ত্রাস দমনে এবং ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা চেয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০তম সিন্ডিকেটে ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধ করার পরেও নবীন বরণ প্রোগ্রাম করার বিষয়ে জানতে চাইলে শিবিরের সেক্রেটারি মাজাহারুল ইসলাম বলেন, প্রশাসনের সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে যেহেতু রাজনীতি নিষিদ্ধ করছে তাই আমরা ক্যাম্পাসের ভিতরে বা ক্যাম্পাস গেটের আশেপাশে কোন রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করছি না।

রাজনৈতিক কার্যক্রমের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রক্টর ড. মো: আবদুল হাকিম বলেন, তারা প্রকাশ্যে রাজনৈতিক প্রোগ্রাম করেছে কিনা আমি জানি না। বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ব্যবহার করে কোনো রাজনৈতিক দল প্রোগাম করতে পারে না।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদেরকে শুভেচ্ছা কার্ড, শিবিরের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি, টেবিল ক্যালেন্ডার, শিবিরের পরিচিতি, কলম ও চারটি বই উপহার দেওয়া হয়।