Sunday , 2 October 2022
  1. অন্যান্য সংবাদ
  2. উপজেলার খবর
  3. কুমিল্লা ইউনিভার্সিটি
  4. কুমিল্লার খবর
  5. চাঁদপুর জেলা
  6. চাকরির খবর
  7. দেশজুড়ে
  8. ধর্ম
  9. প্রবাসের খবর
  10. বিনোদন
  11. ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা
  12. মুক্ত মতামত ও ফিচার পোষ্ট
  13. রাজনীতি
  14. শিক্ষা
  15. সম্পাদকীয়

প্রবাসী খায়েরে চেষ্টায় নারী শিক্ষায় আলোকিত পাঁচটি গ্রাম

প্রতিবেদক
admin
October 2, 2022 12:29 pm

রুবেল মজুমদার ।।
আবু খায়ের। আমেরিকা প্রবাসী,ছাত্রজীবন থেকে তার স্বপ্ন ছিল নিজ এলাকা একটি প্রতিষ্ঠান স্থাপন করবেন,সে অদ্যম ইচ্ছা ও মায়ের অনুপ্রেরণা নিয়ে ছাত্রজীবন থেকে নিজের ইচ্ছাকে সফল করতে সংগ্রাম শুরু করেন,শুরুতে ব্যাপারটি সহজ ছিল না,প্রতিমাসে কিছু টিউশনীর টাকা জমিয়ে নিজ এলাকায় গড়ে তুলেন একটি স্বপ্নের লাইব্রেরী। যদি তার লাইব্রেরিটি ব্যবসায়ী উদ্দেশ্যে তৈরি করেন,পরে তার জনসেবামূলক কাজে প্রতিষ্ঠাতা করেন।

তবে তার লাইব্রেরীতে ছিল সেসময়কার বিভিন্ন শ্রেনীর একাডেমীর স্তরের বই,আশেপাশের কয়েকটি গ্রামের দরিদ্র ও অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীরা তার এ লাইব্রেরী থেকে বই সংগ্রহ করে পড়াশোনা করতেন। লাইব্রেরী বই পড়ে অনেকেই আজ বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে চাকুরি করছেন।
খায়েরের ছোটবেলা স্বপ্নে নিজ এলাকার জন্য একটি প্রতিষ্ঠান স্থাপনের জন্য ১৯৯৮ সালের দিকে ৬৬ শতাংশ জমি ক্রয় করে মাদ্রসার কাজ শুরু করেন। প্রায় দেড় কোটি খরচ করে ১৯৯৯ সালের দিকে মাদ্রসার কাজ শেষ করা হয়। একক প্রচেষ্টা ও অদম্য ইচ্ছা তার প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে ২৫০ শিক্ষার্থী রয়েছে।

এছাড়া মিলেছে শিক্ষকসহ ২২ জনের কর্মসংস্থান,মাদ্রসাটি বর্তমানের দাখিল পর্যন্ত পড়ানো হচ্ছে।তবে প্রবাসী খায়ের ইচ্ছা সেই কামিল পর্যন্ত শিক্ষা দেওয়ার । প্রতি বছর ন্যায়ে এবার তিনি বিন্যমূল্য বই বিতরণ ও দুই লক্ষ টাকা খচর করে মেয়েদের পর্দার জন্য বোকরা বিতরণ করেন ।

এছাড়া টাটেরা গ্রামের বিধবা নারীদের সহযোগিতা ও অস্বচ্ছল পরিবারে একাধিক মেয়ে বিবাহের ব্যবস্থা করেছেন এ প্রবাসী। যুবসমাজের উন্নয়নের জন্য নানা সময় উচ্চ শিক্ষার জন্য তিনি বৃত্তির আয়োজন করেন। দেশে আসলে তিনি যুবসমাজকে মাদকমুক্ত করতে নিজ উদ্যোগে নানা কর্মসূচি গ্রহন করেন। মাদ্রসাটি পড়াশোনা করেন ব্রাহ্মণপাড়ার উপজেলার নাইঘর,ব্রাহ্মণপাড়া,দীঘভূমি,বেজোড়া,ছাতিয়ানি,টাটেরাছয় গ্রামের প্রায় ১ হাজার পরিবারের নারী সন্তানেরা ।

কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সাহেবাবাদ ইউনিয়নের টাটেরা গ্রামের স্কুল শিক্ষক হাজী রেহান উদ্দিন আখন্দের ছেলে আবুল খায়ের আকন্দ। ছয় ভাই চার বোনের মাঝে সবার বড় আবুল খায়ের। বতর্মানে এক কন্য ও দুই পুত্র নিয়ে বসবাস করেন আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরে। ছাত্রজীবন থেকে তাঁর স্বপ্ন ছিল সমাজে নারী-পুরুষ সমান মর্যাদা আর অধিকার নিয়ে বাঁচবে। সেই স্বপ্নের ও ইচ্ছা পূরনে নিজ এলাকা পিছে পড়া নারীদের শিক্ষা আলোকিত করতে গড়ে তোলেন বাবার নামে হাজী রেহান উদ্দিন আখন্দ মহিলা মাদ্রসা নামে এ প্রতিষ্ঠানটি ।

আবু খায়ের আকন্দ বলেন,আমি গ্রাম থেকে পড়াশোনা করেছি,ছোটবেলা থেকে দেখতাম মেয়েরা একটু বড় হলে বিয়া হয়ে যেতো, এতে করে নারী শিক্ষা আমাদের এলাকায় ছিলো না বললে চলে।আশেপাশে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ওহ ছিল না,শিক্ষার হার শতকরা ১০ নিচে ছিলো। তখন থেকে ইচ্ছা জাগলো আমি সফল হয়ে নিজ গ্রামে একটি মাদ্রসা প্রতিষ্ঠা করবো। আল্লাহ রহমতে আমি সফল হয়েছি,ভবিষ্যৎ আমার ইচ্ছা আছে বড় পরিসরে তথ্য ও প্রযুক্তি সহযোগিতা আধুনিক একটি লাইব্রেরী স্থাপন করবো ,পাশাপাশি আমি আমার মাদ্রসাটি কে পর্যায়ক্রমে কামিল পর্যন্ত করবো।আমরা ইচ্ছা আমি সমগ্র ব্রাহ্মণপাড়া আধুনিক নারী শিক্ষা ছাড়িয়ে দিবো ।
টাটেরা গ্রামের বাসিন্দা মামুন সরকার বলেন,খায়ের ছোটবেলা থেকে মানুষের উপকার করতো,এ গ্রামের অসংখ্যা ছেলে মেয়েকে পড়াশোনার জন্য সহযোগিতা করেছেন। তার স্বপ্ন ছিল টাটেরা একটি মাদ্রসা স্থাপন করবে,সে তা করেছে। ব্যক্তি উদ্যোগে তার এ কাজ এলাকাবাসী হিসাবে সত্যি আমরা খুশি। এখানে আমাদের সন্তানরা পড়াশোনা করছেন,ভবিষ্যৎ খায়ের আরো ও ভালো কিছু করবে ।

হাজী রেহান উদ্দিন আখন্দ মহিলা মাদ্রসার সভাপতি ডা. আবুল বাশার বলেন,মানুষ প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার মাধ্যমে ইতিবাচক পরিবর্তন করে নিজেকে জ্ঞানে বুদ্ধিতে মনোবলে এবং ইচ্ছাশক্তিতে উদ্দীপ্ত করে কর্মময় জীবনে নিজের অবস্থান সুদৃঢ় করে অর্থনৈতিক মুক্তি বা আর্থিক সচ্ছলতা সাধন করে। আর এটি নারী পুরুষ সকলের আজকাল নিজেদেরকে আত্মনির্ভরশীল করে তুলতে পারে। গ্রামের নারী শিক্ষা সবসময় পিছিয়ে থাকে,সেই চিন্তা থেকে আমার বড় ভাই খায়ের ওনি এ প্রতিষ্ঠানটি স্থাপনের সিন্তান্ত গ্রহন করে ।

ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সাহেবাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনির হোসেন চৌধুরী বলেন, প্রবাসী খায়ের প্রতিষ্ঠান কারনে কিন্তু এ এলাকার শিক্ষা মান বাড়ছে,অনেকেই উচ্চ শিক্ষা গ্রহন করছে,এভাবে সরকারি পাশাপাশি সমাজের বিভিন্ন পেশাজীবি মানুষ এগিয়ে আসলে আমাদের সমাজ শিক্ষার ক্ষেত্রে এগিয়ে আসবে বলে আমি মনে করি।

ব্রাহ্মণপড়া উপজেলার নিবার্হী অফিসার বলেন,বিষয়টি আমি শুনছি,তবে ব্যক্তি উদ্যোগে এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যদি সমাজকে এগিয়ে নিতে সহযোগিতা করে,তাহলে প্রবাসী খায়ের প্রচেষ্টা সত্যি প্রংশসার দাবি রাখি ।

সর্বশেষ - কুমিল্লার খবর

আপনার জন্য নির্বাচিত