সৌরভ লোধ,বরুড়া প্রতিনিধিঃ
দলবেঁধে বসে আছে কয়েকজন তরুন, তার একটু দূরেই আবার দলগত ভাবে বসে আছে আরেক প্রতিপক্ষ।
দূর থেকে দেখলে বুঝার উপায় নেই কি করছে তারা।একটু সামনে গেলেই কানে শব্দ আসতে লাগলো,
মার! মার! ধর! ধর! গুলি কর! গ্রেনেড মার! তাড়াতাড়ি গুলি কর! মোবাইল ফোনের গেমসের এসব কথা এখন সারাদেশের মত কুমিল্লার বরুড়ার প্রতিটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের ঘরে ঘরে, মাঠে, বাজারে,রাস্তা ও অলিগলিতে।
কয়েক বছর ধরে তরুন্দের রাজ্যে একাই রাজত্ব করছে এই ফ্রি ফায়ার মোবাইল গেমসটি।
করোনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিলো দীর্ঘদিন।
তখন থেকেই কোমলমতি শিক্ষার্থীরা আসক্ত হয়ে পড়েছে ফ্রি ফায়ার গেমসে এমনি অভিমত জানিয়েছেন অভিভাবক সহ শিক্ষার্থীরা।
নবম শ্রেণি পড়ুয়া এক শিক্ষার্থী বলেন, এই গেমস সম্পর্কে কিছু জানতাম না। এখন নিয়মিত ফ্রি ফায়ার গেমস খেলার নেশা হয়ে গেছে। মাঝেমধ্যে নেট সমস্যায় এ গেমস খেলতে না পারলে মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলার ইচ্ছা হয়। ফ্রি ফায়ার গেমস যে একবার খেলবে, সে আর ছাড়তে পারবে না।
ফ্রি ফায়ার আসক্ত একদল তরুন আমাদের জানান, ফ্রি ফায়ার গেম খেলতে ডায়মন্ড কিনতে হয়। ১০০ ডায়মন্ডের দাম ৮০ টাকা। ১০৬০ ডায়মন্ডের দাম ৭৯০ টাকা। মেম্বারশিপ সপ্তাহে ১৭০ টাকা, মাসিক ৫১০ টাকা। এ ছাড়া প্রতিটা ইভেন্টে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা খরচ না করলে কিছুই হয় না।
তারা আরো জানায়,গেমটিতে প্রথমে কোনো খরচ ছিল না, কিন্তু পুরোপুরি মনোযোগী হলে এমন কিছু জিনিস আছে, যা না কিনলেই নয়। যেমন, অলকের দাম ৪০০ টাকা, একজন খেলোয়াড়ের জার্সি ৩০০ টাকা, নতুন ইভেন্ট এলেই ২০০০ এর নিচে যাওয়া যায় না। সম্পূর্ণ ড্রেস কিনতে লাগে ১২০০ টাকা আর রেগুলার ইভেন্টের কথা তো বলাই বাহুল্য।
উপজেলায় একাধিক সচেতন ব্যক্তি জানান, উঠতি বয়সী শিক্ষার্থী ও তরুণরা নেশার মতো মোবাইল গেমসের আসক্ত হয়ে পড়ছে। যে সময় তাদের ব্যস্ত থাকার কথা পড়ালেখা ও খেলার মাঠে ক্রীড়া চর্চার মধ্যে সেখানে তারা মোবাইল গেমসে আসক্ত হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, অভিভাবকরা বলছেন, গ্রামে খেলার মাঠ না থাকায় খেলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিশুরা। এই ভিডিও গেমসে আসক্ত ছেলেদের ভবিষ্যৎ কী হবে?
বর্তমানে এই ফ্রি-ফায়ার গেমসে শিক্ষার্থীরা সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকে। শিক্ষর্থীদের জন এটা মারাত্মক ক্ষতি করছে। তবে সকল অভিভাবকদের উচিত এ গেমস থেকে তাদের সন্তানদের দূরে রাখা।।