নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
মোসা. রহিমা(১৪)। আলেকজান মেমোরিয়াল স্কুল এ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী। কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার উত্তর দূর্গাপুর তাদের বাড়ি। পাঁচ বোন এক ভাইয়ের মাঝে রহিমা তৃতীয়। রহিমার বাবা মো. আবদুল হক একজন রাজমিস্ত্রী। অভাব অনটনের সংসার। তাই তৃতীয় মেয়ে রহিমার জন্য পাত্র ঠিক করেছেন। পারিবারিকভাবে বিয়ের প্রস্তুতি চলছিল। একদিন পর সামনের বুধবার বিয়ের দিন ধার্য্য করা হয়। তবে এই বয়সে বিয়েটা মেনে নিতে পারেনি রহিমা।
বিয়ের কথা জেনেই সোমবার (২৮ মার্চ)সকাল ১০ টায় স্কুলে চলে যায় সে। সোজা গিয়ে বিয়ের বিষয়টা জানান অধ্যক্ষ শিক্ষক আবদুল মান্নানকে। আলেকজান মেমোরিয়াল স্কুল এ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল মান্নান স্থানীয় ইউপি সদস্য খায়েরুল ইসলাম খায়েরকে জানান। তারা দু’জনে মিলে রহিমার বাবাকে বুঝিয়ে বিয়েটা বন্ধ করলেন।
অধ্যক্ষ আবদুল মান্নান বলেন, মেয়েটার বিয়ের বয়স হয়নি। এই ছোট মেয়েটার চিন্তা দেখে আমি বিস্মিত হয় গেছি। আমি তাকে বলেছি তার বিয়ে বন্ধের ব্যবস্থা করবো।পরে তার বাবাকে বাল্য বিয়ের ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরেছি। রহিমার লেখাপড়ার জন্য বই খাতা কলমসহ প্রাতিষ্ঠানিক সব খরচ আমি বহণ করবো বলে আশ্বাস দেই। তখন মেয়ের বাবা বিয়ে বন্ধ করতে রাজি হয়।
ইউপি সদস্য খায়েরুল ইসলাম খায়ের বলেন, খবর পেয়ে মেয়ের বাড়িতে যাই। আসলেই রহিমার পরিবার অভাব অনটনে আছে। তবে আমি রহিমার বাবাকে বলেছি অধ্যক্ষ সাহেব লেখাপড়ার খরচ চালাবে। আমি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে চাল ডালের ব্যবস্থা করবো। আপনি বিয়ে বন্ধ করেন। মেয়ের বাবা আবদুল হক আমাদের কথা রেখেছেন।
রহিমার বাবা আবদুল হক বলেন, দুই মেয়েরে বিয়ে দিছি। অভাবের সংসারে এবার আমার তৃতীয় মেয়েরেও বিয়ে দিতে দিন তারিখ ঠিক করছি। তবে মেম্বর ও স্কুলের হেড মাষ্টরের কথা হুইন্না বিয়াডা বন্ধ করছি।
বিয়ে বন্ধ হওয়ায় আনন্দিত রহিমা বলেন, আমি লেখাপড়া করে অনেক বড় হতে চাই। বাবা বলছে এখন বিয়ে বন্ধ। আমি খুবই খুশি। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।