আবুল বাশার(দেবিদ্বার) কুমিল্লাঃ
কুমিল্লার দেবিদ্বারে ঈদ-উল-আযহার আগের দিন শান্ত হত্যার চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে প্রত্যক্ষদর্শীরা।
বৃহস্পতিবার আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে দুই প্রত্যক্ষদর্শী, ছুরিকাঘাতে আহত আরমান আলম (সিকাব) ও নুরুল ইসলাম।
জবানবন্দিতে তারা বলেন, ‘ধারালো ছোড়া হাতে আমেরিকা প্রবাসী আজমুল ফুয়াদ সাজিব (২৩) যখন এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে যাচ্ছিল তখন তাকে নিবৃত্ত করতে গিয়ে খুন হন মেহেদী হাছান শান্ত। পুরো কিলিং মিশন শেষ হয় মাত্র এক মিনিটে। পরে ঘাতক সাজিব মোটরসাইকেলযোগে পালিয়ে যায়।’
অথচ হত্যা মামলায় সাজিবকে আসামি না করে সাক্ষী করা হয়। জবানবন্দি রেকর্ড করেন আমলী আদালত-৪-এর বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারহানা সুলতানা।
বৃহস্পতিবার রাতে জবানবন্দীর বিষয়টি নিশ্চিত করেন দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) খাদেমুল বাহার।
উল্লেখ্য, গত ৯ জুলাই বিকেলে দেবিদ্বার উপজেলার নুরপুর গ্রামে পূর্ব বিরোধের জের ধরে আমেরিকা প্রবাসী আজমুল ফুয়াদ সাজিব এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত শুরু করলে তাকে নিবৃত্ত করতে গিয়ে ছুরিকাঘাতে নিহত হন একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সহযোগী শান্ত। এ সময় ছুরিকাঘাতে আহত হন আরো চার জন।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা জাকির হোসেন পর দিন একই গ্রামের আল আমিন, সাদ্দাম, ছগির, বায়েজিদ, সিরাজ ও মোখলেছসহ ছয়জনকে এজাহার নামীয় ও অজ্ঞাতনামা ১৫ থেকে ২০ জনের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা করেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আহত আরমান আলম (সিকাব) ও নুরুল ইসলাম আদালতে জবানবন্দি শেষে সাংবাদিকদের বলেন, ‘ছোড়া নিয়ে সাজিব ছুরিকাঘাত করে শান্তকে হত্যাসহ আমাদের আরো চারজনকে আহত করেছিলেন। এক মিনিটের মধ্যেই কিলিং মিশন শেষ করেন তিনি। প্রকাশ্যে ঘটনাটি ঘটেছে, কিন্তু সাজিবকে আসামি না করে মামলার পাঁচ নম্বর সাক্ষী করা হয়। তারা ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও আহত হওয়ায় জবানবন্দিতে ঘটনার আদ্যপ্রান্ত তুলে ধরেছেন বলেও জানান।
এ ছাড়াও তিনি জানান, ঘটনায় জড়িত না থাকলেও হত্যা মামলায় দু’ নম্বর আসামি করা হয় ক্যান্সার আক্রান্ত সাদ্দাম হোসেনকে। পুলিশ তাকে গ্রেফতারও করেছে। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
খাদেমুল বাহার বলেন, হত্যা মামলায় সাজিবের নাম না দিলেও প্রত্যক্ষদর্শী ও আহত দু’যুবক আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে সাজিবের নাম বলেছে। এসব তথ্য যাচাই করে দেখা হচ্ছে। ঘটনার পর থেকে সাজিব পলাতক রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, একই ঘটনায় ছুরিকাঘাতে মারাত্মক আহত আশরাফুল ও রাসেল নামের দু’যুবক এখনো কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। এ ঘটনায় আহত আরমানের বাবা খোরশেদ আলম সাজিবকে প্রধান আসামি করে পাঁচজনের বিরুদ্ধে বুধবার আদালতে মামলা করেছেন। যা আদালতের নির্দেশে বৃহস্পতিবার রাতে থানায় এফআইআর করা হয়েছে।